সুরঞ্জিত নাগ :
ফেনী শহরের শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন সড়কে অবস্থিত জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি রপ্তানি কার্যালয়ে দুর্নীতি ও চাঁদাবাজির অভিযোগে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বৃহস্পতিবার (২০ এপ্রিল) নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট সোহেল রানার নেতৃত্বে এক আকস্মিক অভিযান পরিচালিত হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট রানুয়ারা খাতুন ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।
নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট সোহেল রানা বলেন, বিদেশ গমনেচ্ছু ফিঙ্গার প্রিন্ট দিতে আসা লোকদের কাছে স্থানীয় পৌর কাউন্সিলর সিরাজুল ইসলাম ও তাঁর আত্মীয়স্বজন পরিচয়ে কিছু ব্যক্তি জনশক্তি কার্যালয়ে আসা সেবাগ্রহীতাদের নিকট থেকে চাঁদা ও অতিরিক্ত অর্থ আদায় করেন বলে জানান ফেনী জনশক্তি রপ্তানি কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক নিজাম উদ্দিন। তিনি এই অবস্থার প্রতিকার দাবি করেন। তিনি আরো বলেন, দুর্বৃত্তরা তাঁর ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে চাঁদা চেয়ে ‘বার্তা’ পাঠিয়েছেন।
এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক মো. আমিন উল আহসান অবগত হয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) দেবময় দেওয়ানকে ফেনী জনশক্তি রপ্তানি কার্যালয়ে ‘চাঁদাবাজির অভিযোগের প্রেক্ষিতে’ তদন্ত করার জন্য নির্দেশ দেন। তিনি বলেন, সরকারি অফিসে এ ধরনের চাঁদাবাজি কোনভাবেই মেনে নেওয়া যাবে না।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, ফেনী জনশক্তি রপ্তানি কার্যালয়ে পাঁচটি টেবিলে চলে বিদেশ গমনেচ্ছুদের ফিঙ্গার প্রিন্ট কার্যক্রম। প্রতিদিন শতাধিক ব্যক্তি এখানে ফিঙ্গার প্রিন্ট দিয়ে থাকেন। উপরি ছাড়া ফিঙ্গার প্রিন্ট দেওয়াই অসম্ভব। নানা জটিলতায় পড়তে হয় সেবা গ্রহীতাদের। কার্যালয়ের আশপাশে ঘিরে থাকে দালাল চক্রের লোকজন। টাকা ছাড়া ফিঙ্গার প্রিন্ট দিতে গেলে সিরিয়ালের অজুহাত দিয়ে ফিরিয়ে দেন ওই কার্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
ফেনী সদর উপজেলার ধর্মপুর ইউনিয়নের আবুল হোসেন জানান, বিদেশে যাওয়ার জন্য ফিঙ্গার প্রিন্ট দিতে গেলে ফেনী জনশক্তি রপ্তানি কার্যালয়ের হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা হারুনুর রশিদ খান সিরিয়ালের অজুহাত দিয়ে পরে যোগাযোগ করতে বলেন। কিন্তু সদর উপজেলার গোবিন্দপুর গ্রামের আবুল কালাম জাবেদ জানান দালালদের ৫০০ টাকা দিয়ে তিনি তাঁর ফিঙ্গার প্রিন্ট দিয়েছেন। এ চিত্র নিত্যদিনের।
উল্লেখ্য; বিদেশ গমনেচ্ছুদের নানা সুবিধা প্রাপ্তির পাশাপাশি সরকারের সহযোগিতা পেতে গত দুই মাস পূর্বে ফেনীতে জনগুরুত্বপূর্ণ এ কার্যালয়ে পাঁচটি কম্পিউটার ও দুইটি ফিঙ্গার প্রিন্ট স্থাপন করা হয়। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসের শেষের দিকে জনদুর্ভোগ কমিয়ে সহজভাবে ফিঙ্গার প্রিন্ট দিতেই ফেনী জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি কার্যালয়টি শহরের শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন সড়কে স্থানান্তর করা হয়। এর আগে ফেনীর বিদেশ গমনেচ্ছুদের ফিঙ্গার প্রিন্ট দিতে নোয়াখালী জেলা সদরে যেতে হত। প্রতিদিন বিদেশ যেতে আগ্রহীদের সংখ্যা বাড়তে থাকায় এ কার্যালয়কে ঘিরে গড়ে উঠেছে দালাল সিন্ডিকেট। কতিপয় অসাধু কর্মকর্তার যোগসাজসে দালাল চক্র ফরমের নামে গ্রাহকদের জিম্মি করে টাকা আদায় করছে। স্থানীয় পৌর কাউন্সিলর সিরাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, ফিঙ্গার প্রিন্ট কার্যক্রমে গ্রাহকদের সহযোগিতা করতে এলাকার কয়েকজন যুবককে তিনি এ দায়িত্ব দেন।
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
- » বাংলাদেশ সম্মিলিত শিক্ষক সমাজ ফেনী জেলা আহবায়ক কমিটি গঠিত
- » ফেনী বন্ধুসভার বৃক্ষরোপণ ও বিতরণ
- » আমার দেশ সম্পাদকের রত্নগর্ভা মাতা অধ্যাপিকা মাহমুদা বেগমের মাগফিরাত কামনায় ফেনীতে দোয়া
- » গাজীপুরে সাংবাদিক তুহিন হত্যার প্রতিবাদে ফেনীতে সাংবাদিকদের মানববন্ধন
- » ফেনীতে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের সাংবাদিকদের উপর হামলার গোপন পরিকল্পনা ফাঁস
- » জনতার অধিকার পার্টির চেয়ারম্যানের উপর হামলা, সংবাদ সম্মেলন
- » ফেনী পৌর বিএনপির সদস্য নবায়ন কর্মসূচি উদ্বোধন
- » ফেনীতে হেফাজতের দোয়া মাহফিলে আজিজুল হক ইসলামাবাদী- ‘আলেম সমাজ ঐক্যবদ্ধ থাকলে দেশে আর ফ্যাসিবাদ সৃষ্টি হবে না’
- » ফেনীতে হাফেজ তৈয়ব রহ. স্মরণে দোয়ার মাহফিল
- » ছাত্র জনতার ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে ফেনীতে বিএনপি’র বর্ণাঢ্য বিজয় মিছিল, সমাবেশ “গণহত্যার দ্রুত বিচার ও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের দাবি”